1. admin@amaderchannel.online : admin :
  2. wordpUser3@org.com : GuaUserWa3 :
  3. wordpUser5@org.com : GuaUserWa5 :
বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
ব্রেকিং নিউজ:
আজ ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ১৬ই রজব, ১৪৪৬ হিজরি , ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গুরুজি রমেশ শীল মাইজভান্ডারী

  • Update Time : রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
  • ৩৮ Time View

 

গুরুজি রমেশ শীল মাইজভান্ডারী
বরুণ কুমার আচার্য বলাই

কবিয়াল রমেশ শীলের দেশাত্মবোধক পদ্য ও গান তাঁর প্রখর সমাজ-সচেতন ও সংবেদনশীল মনের পরিচয় বহন করে। তাঁর বহুগান মানুষের মুখে মুখে গীত হয়। আমাদের লোকসাহিত্যের প্রধান ধারাকে তিনি যথার্থভাবে উপস্থাপন করে লোকজীবনের বিশ্বস্ত ভাষ্যকার হিসেবে গণ্য হয়েছেন। যুগের আকাঙ্ক্ষা, বেদনা, সমস্যা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ—তাঁর কণ্ঠে সহজ অথচ আশ্চর্য বলিষ্ঠতায় স্বতঃস্ফূর্ততায় মূর্ত। শিল্পী হিসেবেও অন্যদের মতো ছকবাঁধা বিষয়ে আবদ্ধ থাকেননি। দেশের ইতিহাসের সঙ্গে তাঁর শিল্পীসত্তা এক হয়ে মিশে গেছে।
রমেশ শীলের জন্ম ১২৮৪ বঙ্গাব্দের ২৬ বৈশাখ; ১৮৭৭ খ্রিষ্টাব্দে। চণ্ডিচরণ শীল ও শ্রীমতি রাজকুমারী দম্পতির একমাত্র পুত্রসন্তান রমেশচন্দ্র শীল। তাঁর অন্য তিন সহোদরা সতনী বালা, গয়া বালা ও সরোজনী বালা। পিতা চণ্ডিচরণ শীল ছিলেন কবিরাজ। বনজ বৃক্ষ-লতা-পাতা দিয়ে ঘা-ক্ষতের চিকিত্সা করতেন এবং বাত-ফোঁড়ার কাটা-ছেঁড়াও। পারিবারিক অভাব-অনটন থাকলেও সাত বছর বয়সে রমেশ শীলকে ১৮৮৪ সালে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। তখন থেকেই গানের প্রতি তাঁর প্রাণের টান ও আন্তরিক অনুরাগ ছিল অপরিসীম। গান-বাজনার প্রতি ছেলের আগ্রহ দেখে বাবা তাঁকে ‘তরজার লড়াই’ গানের বই কিনে দেন। ১৮৮৮ সালে বাবা মারা গেলে তাঁর আর প্রাইমারি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়নি। রমেশ শীল লিখেছেন:
একদশ বর্ষ পূর্ণ না হইতে
বাবা গেল স্বর্গপুরে।
আমিই বালক, চালক, পালক
আমার আর কেহ নাই
মায়ের অলংকার সম্বল আমার
বিক্রি করে খাই।
তিন সহোদরা মাতা মাতামহী
ছয়জনে এক পরিবার
এই হলো শিক্ষা আমার
প্রাইমারি পরীক্ষা ভাগ্যে না জুটিল আর।
মাইজভাণ্ডারী আধ্যাত্মিক দর্শনে সমস্ত বৈষম্য-ভেদাভেদের ঊর্ধ্বে মুক্তির দিশা পেয়েছিলেন বলেই উপমহাদেশের প্রখ্যাত কবিয়াল রমেশ শীল সর্বমানবের সফলতার উদ্দেশে উদাত্ত কণ্ঠে গেয়েছেন—
মন অহংকারে দিন কাটালি
মানুষ হবি কেমন করে
তোর সাধন ভজন নষ্ট হলো
হিংসা-নিন্দা-অহংকারে।
জমিদারি পাকাবাড়ি
এই নিয়ে তোর অহংকারই
সফল ধন দুনিয়াদারি
আসল ধন মাইজভাণ্ডারে।
মাইজভাণ্ডারী-সাধনায় দার্শনিক ভিত্তিই হলো মানবতা; প্রেমভক্তির নিরিখে ভাবসাহিত্য ও সাধনসংগীতে স্বয়ংসিদ্ধ-স্রষ্টার নৈকট্যপ্রাপ্ত মুর্শিদকে জানার যে প্রয়াস, তার মহত্ চেতনা দ্বারা মানবাত্মা অবিনাশী পবিত্রতায়, সুন্দরতর মানবিক সর্বজনীনতায় নিবেদিত এবং পরম প্রার্থিত। ঐকান্তিক একাগ্রতায় জানার প্রচেষ্টায় যে অনুশীলন ঐ দর্শনে সম্পন্ন হয় তাতে জীবনের চরম সত্য মানবধর্মের কল্যাণে সফলতার পথপ্রদর্শকরূপে ক্রিয়া করে। বিশ্বে ধর্মবিরোধ মিটিয়ে এর সমন্বয় সাধন করতে সমর্থ মাইজভাণ্ডারী দর্শনে ‘সবের মাঝে এক’-কে অন্বেষণের তত্পরতা পরিদৃষ্ট হয়। মানবধর্মের সাধনাই এর আসল প্রেক্ষাপট। মাইজভাণ্ডারী দর্শনের মানবিক দিকগুলো তাঁর লেখার  বৈশিষ্ট্য।
১৯৬৭ সালের ৬ এপ্রিল, ২৩ চৈত্র অর্থাত্ আজ এই খ্যাতিমান লোককবি ইহলোক ত্যাগ করেন। কবিয়াল রমেশ শীলের মৃত্যুদিবসে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 আমাদের চ্যানেল
ওয়েবসাইট ডিজাইন প্রযুক্তি সহায়তায়: CloudVai-ক্লাউড ভাই