দরবার খানকা ও মাজার শরীফে হামলার বিরুদ্ধে
বাংলাদেশ তরিকত পরিষদের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ তরিকাপন্থি অরাজনৈতিক জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ তরিকত পরিষদ (বিটিপি)’র উদ্যোগে দেশব্যাপী বিভিন্ন মাজার ও দরবারসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে একের পর এক ঘটে চলা ন্যাক্কারজনক হামলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা, মানববন্ধন ও মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নিকট স্মারকলিপি প্রদানের আয়োজন করা হয়।
আজ শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে শুরু হওয়া উক্ত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ কাওসার মোস্তফা আবুল উলায়ী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভপতি খানদানী দরবার শরিফের পীর আবুল বাশার খান্দানী।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, “ ছাত্র-জনতার রক্তঝরা বিজয়কে পুঁজি করে, সমাজের শান্তি প্রতিষ্ঠার অগ্রপথিক পীর-দরবেশগণের মাজার ও খানকায় একের পর এক ন্যাক্কারজনক হামলা অগ্নিসংযোগ করে ফায়দা লুটছে ওলী বিদ্বেষীরা। আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মূল সমন্বয়কদের এদিকে নজর দেয়ার সময় এসেছে।”
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা জাকির হোসাইন। অনুষ্ঠানে স্মারকলিপি পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও ডেমরাস্থ চিস্তিয়া খানকার পরিচালক মো. শামসুল আলম চিস্তি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যকালে সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ছৈয়দ জাফর ছাদেক শাহ বলেন, “ ছাত্রদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাওয়ার মতো সমাজে নৈরাজ্য সৃষ্টির ধৃষ্ঠতায় মেতেছে ওলী বিদ্বেষীরা। বিজয়কে অর্থবহ করতে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের নিরাপত্তা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাই ”।
বিটিপি’র স্মারকলিপিতে পেশকৃত চার দফাঃ
১ম দফাঃ যে সকল মাজার ভাঙচুর করা হয়েছে, ভাঙচুরে জড়িতদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান।
২য় দফাঃ দেশের সকল দরবার, মাজার, খানকাগুলোতে নিরাপত্তা প্রদান।
৩য় দফাঃ দরবার, মাজার, খানকাগুলোতে বাৎসরিক মাহফিল, মাসিক মাহফিল, সাপ্তাহিক মাহফিলগুলোতে যাতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে সেই জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ।
৪র্থ দফাঃ দেশের বিভিন্ন স্থানে সুন্নী ইমামগনকে (যাদেরকে ইতঃপূর্বে জোরপূর্বক বের করে দেয়া হয়েছে) তাদের স্ব স্ব মসজিদে ইমামতিতে পুনর্বহাল করণ।
প্রধান বক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসানুল হাদী বলেন, “এক একটি মানুষের শঠতা, হঠকারিতা সন্ত্রাসী আগ্রাসী মানসিকতা পরিশুদ্ধ করে সম্প্রীতির সমাজগঠনে ভূমিকা রাখেন পীর আউলিয়াগণ। ওলী বিদ্বেষীরা উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে পৈশাচিক খেলায় মেতেছে। তারা ছাত্র জনতার বিজয়কে নিজেদের আখের গুছানোর হাতিয়ার করে নির্লজ্জ হামলা চালাচ্ছে মাজার খানকায়।
কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক শাহ মিডুর সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন টঙ্গিস্থ পাগাড় দরবারের শাহছুফি আলী রেজা পেহলভী হায়দার, আল কদমী দরবারের আমিনুল এহসান ফেরদৌস, বিটিপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পীরজাদা আব্দুল আলীম অভি বৈরাবরী তার বক্তব্যে বলেন, শান্তির ধর্ম ইসলামের মধ্যে কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে ওলী-আউলিয়াদের মাজার শরীফ ভেঙে অশান্তি সৃষ্টি করবেন না। শাহছুফি দ্বীন মোহাম্মদ নিজামী চিশতী, শাহছুফি মুক্তার রেজা মাসুমী, গাছতলা দরবারের পীর খাজা আরিফুর রহমান প্রমুখ। পরে মিলাদ কিয়াম ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোহাম্মদ মহররম হোসেন মাহ্দী